27 Nov 2024, 02:15 am

অভ্যুত্থানের দুই বছর পরেও মিয়ানমারে যুদ্ধ-বিগ্রহ থামেনি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে, সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের দুই বছর পর, বিশ্লেষকরা বলছেন দেশটি ক্ষমতাসীন জান্তা এবং প্রতিরোধ শক্তি, প্রচন্ড ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে একটি মারাত্মক যুদ্ধের চক্রে আটকে আছে, যা এই বছরের সম্ভাব্য নির্বাচনের আগে আরও রক্তাক্ত পরিস্থিতি বয়ে আনবে।

জান্তা এখনও দেশটির বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং পাঁচ কোটি চল্লিশ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটি একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছ থেকে প্রবল আক্রমণের শিকার হচ্ছে। জাতিসংঘ বলেছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে লড়াইয়ে এ পর্যন্ত ১২ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, এবং এই সংখ্যা এখনও প্রতি মাসে কয়েক হাজার করে বাড়ছে।

বিশৃঙ্খলা সত্ত্বেও, বিশ্লেষকরা আশা করছেন, জান্তা একটি বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য আগস্টের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাবে। তবে জান্তার বিরোধীরা বলছে,এই সরকার দ্বারা পরিচালিত যে কোনো নির্বাচনে কারচুপি হবেই এবং শুধু নামমাত্র একটি বেসামরিক সরকার গঠিত হবে।

মিয়ানমারের বিশ্লেষক এবং ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের সিনিয়র উপদেষ্টা রিচার্ড হরসি এই সংঘাত সম্পর্কে বলেছেন, “কোনও সামরিক সমাধান তো দূরে থাক, রাজনৈতিক সমাধানও সুদূর পরাহত বলে মনে হচ্ছে”।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে, শত শত স্থানীয় মিলিশিয়া বা পিডিএফ নামে পরিচিত জনগণের প্রতিরক্ষা বাহিনী, সেনাবাহিনীর শাসনকে প্রতিহত করার জন্য দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

ব্রিটেনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এর বিশ্লেষণ করা সর্বসাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধুমাত্র গত অক্টোবর মাসে প্রায় ৫০০টি আক্রমণ বা সশস্ত্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

ইনস্টিটিউটের ডেটা ম্যাপিংয়ে দেখা যায়, লড়াইয়ের বেশিরভাগ অংশ এখনও মিয়ানমারের শুষ্ক অঞ্চলগুলোতে কেন্দ্রীভূত, যা উত্তর ও পশ্চিমে মধ্য মান্দালয় অঞ্চল থেকে ম্যাগওয়ে এবং সাগাইং পর্যন্ত বিস্তৃত। এছাড়া, দক্ষিণ কাচিন এবং উত্তর শান রাজ্যে, মিয়ানমারের উত্তর-পূর্ব এলাকা এবং থাইল্যান্ডের সাথে দেশটির পূর্ব সীমান্ত বরাবর অঞ্চলকে তুমুল লড়াইয়ের ক্ষেত্র বলে দেখা যায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিরোধী দলের অন্য প্রধান সমস্যা হল জাতীয় পর্যায়ে সংহতি ও সমন্বয়ের একগুঁয়ে অভাব।

জান্তা এখনও নির্বাচনের জন্য কোনও তারিখ নির্ধারণ করেনি, তবে জোর দিয়ে বলছে, তারা এই বছর একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চায়।

মিয়ানমারের আরেকটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসির বিশ্লেষক অং থু নিয়েন বলেছেন, “নির্বাচন অনেক সম্ভাব্য লক্ষ্য উপস্থাপন করবে, তাই আমি মনে করি, আমরা বরং একটি সহিংস নির্বাচনী বছর দেখতে পাব।”

ইতোমধ্যে, উভয় পক্ষের ক্রমবর্ধমান সংখ্যক লোককে হত্যার লক্ষ্যবস্তু, অপহরণ এবং শিরশ্ছেদ করা হচ্ছে। অং থু নাইন বলেছেন, সামনের দিনগুলো কেবল একটি মারাত্মক লড়াই নয়, আরও তিক্ত এবং নৃশংস লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 11813
  • Total Visits: 1324216
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২৪শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ২:১৫

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018